কুষ্টিয়ায় মাটির পণ্যে ঐতিহ্যের ছোঁয়া, মেসার্স মামা-ভাগ্নে মৃৎশিল্পের কারুকাজে প্রাণ ফেরে গ্রাহক চাহিদায়
মো. মুনজুরুল ইসলাম
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কল্যাণপুর এলাকায় অবস্থিত মেসার্স মামা-ভাগ্নে মৃৎশিল্প কারখানা স্থানীয় ও আশপাশের জেলায় মাটির তৈরি নানা কারুশিল্প, গৃহস্থালী ব্যবহার্য দ্রব্য ও শৌখিন সামগ্রীর ব্যাপক উৎপাদন ও বিক্রয়ের মাধ্যমে দৃষ্টি কাড়ছে ক্রেতাদের। প্রতিষ্ঠানটি পাইকারি ও খুচরা উভয়ভাবে পণ্য সরবরাহ করে থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ ক্রেতাদের কাছেও এটি হয়ে উঠেছে নির্ভরতার নাম।
প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ মিলন সরদার জানান, “আমরা দেশীয় ঐতিহ্যের মাটির তৈরি সকল প্রকার পণ্য উৎপাদন করি। গ্রাহকের চাহিদা, মান ও ডিজাইনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। তাই আমাদের পণ্যের বাজার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।”
মাটির কলসি, হাঁড়ি-পাতিল, শো-পিস, টব, হুক্কা, পিগি ব্যাংক থেকে শুরু করে আধুনিক নকশার ডেকোরেটিভ পণ্যসহ প্রায় শতাধিক পণ্য এখানে তৈরি করা হয়। স্বল্পমূল্য, মানসম্মত কারুকাজ ও টেকসই ব্যবহারের কারণে হাট-বাজারে এসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কুমারখালী অঞ্চলে দেশীয় মৃৎশিল্প পুনরুজ্জীবনে এ কারখানার ভূমিকা প্রশংসনীয়। এখানে তৈরি পণ্যের মান ভালো হওয়ায় ব্যবসায়ীরা পাইকারি কিনে বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন।
প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় রয়েছেন কয়েকজন দক্ষ কর্মী ও ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি। প্রোঃ মিলন সরদারের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন
মেসার্স মামা-ভাগ্নে মৃৎশিল্পের মালিক জানান, “স্থানীয় কারিগরদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ব্যবসার প্রচারেই আমাদের লক্ষ্য।”
গবেষকরা বলছেন, দেশীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণে এমন মৃৎশিল্প কারখানা কেবল অর্থনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। আর সরকারি সহযোগিতা, প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সুবিধা ও বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নত হলে এ খাত আরও বিকাশ লাভ করতে পারে।
পরিবার নির্ভর কারখানা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে অনলাইন বিক্রয় কার্যক্রম চালুর চিন্তাভাবনা করছে যাতে দেশজুড়ে মাটির পণ্য সরবরাহ করা যায়।
স্থানীয় নাগরিকরা মনে করেন, মাটির পণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও ব্যবহার বাড়লে পরিবেশবান্ধব এই শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।








