কুষ্টিয়ায় খুচরা সার বিক্রেতা–সাব-ডিলারদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
মো. মুনজুরুল ইসলাম
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ হলেও মাঠপর্যায়ের কৃষক এখনও নানা ভোগান্তির শিকার—বিশেষ করে সময়মতো সার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে। সার বিতরণ ব্যবস্থায় জটিলতা ও নীতি অসঙ্গতির কারণে কৃষক এবং খুচরা সার বিক্রেতাদের নানামুখী সমস্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে খুচরা সার বিক্রেতা এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, কুষ্টিয়া জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত শতাধিক খুচরা সার বিক্রেতা ও সাব-ডিলার অংশ নেন। সংগঠনের জেলা সভাপতি মোঃ সাইদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুছ আলীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন উপজেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন চলাকালে দাবি-দাওয়ামূলক স্লোগানে পুরো প্রশাসন চত্বর মুখরিত হয়ে ওঠে।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সার বিতরণ ব্যবস্থায় কিছু ডিলারের অনিয়ম, অতিরিক্ত চাপ, স্বেচ্ছাচারী আচরণ এবং জটিল প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার কারণে খুচরা বিক্রেতা ও সাব-ডিলারদের দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতে হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে। এসব সমস্যার সমাধান না হলে সার সরবরাহে অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
কুমারখালী উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “মাঠপর্যায়ে কাজ করা বিক্রেতাদের বিভিন্ন হয়রানি ও প্রশাসনিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমাদের তিন দফা দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুছ আলী বলেন, “কৃষকের কাছে পরিবেশবান্ধব সার পৌঁছে দিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। কিন্তু নতুন নীতিমালার অসঙ্গতি এবং টি.ও লাইসেন্স ইস্যুতে জটিলতা আমাদের পেশাগত নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।”
জেলা সভাপতি মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, “খুচরা সার বিক্রেতা ও সাব-ডিলাররা মাঠপর্যায়ে সার সরবরাহের মূল শক্তি। নীতিমালার অসামঞ্জস্য দূর না হলে সার বিতরণ ব্যবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে, যা দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
মানববন্ধন শেষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয় বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে তিনটি প্রধান দাবি তুলে ধরা হয়—১. দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত খুচরা সার বিক্রেতা ও সাব-ডিলারদের বিদ্যমান অবস্থান বহাল রাখা।২. টি.ও (ট্রেড অপারেটর) লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করা।৩. ‘সার সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৫’ সংশোধন করে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা।
নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত তাদের দাবি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায় তারা আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন বলেও সতর্ক করেন।








