সোনারগাঁও থানার সামনে বসে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নামে দুলালের ডাকাতি, পুলিশের জলে আটক

সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নামে সোনারগাঁ থানা গেটের সামনের দোকান মা কম্পিউটারস অনলাইন সার্ভিস এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের মালিক দুলাল মিয়ার রীতিমতো ডাকাতির শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (২রা আগস্ট) সোনারগাঁ থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে আসা উপজেলার বাসিন্দা হিরন মিয়া নামে অভিযোগকারী বলেন, সিআর মামলা আছে বলে মিথ্যা কথা বলে দুলাল আমার কাছ থেকে ৩৬ হাজার টাকা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বাবদ হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে আমি থানায় খবর নিয়ে জানতে পারি আমার নামে কোন মামলাই নাই। থানার লোক বলে পরিচয় দেয়ায় আমি সরল বিশ্বাসে তাকে টাকা গুলো দেই।
মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়িমজলিস এলাকার বাসিন্দা নাহিদ হোসেন বলেন, হেফাজতের মামলায় আমার নামে ভুয়া এজহার কপি দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকায় মামলা থেকে নাম কাটিয়ে দেয়ার কথা বলে ছিল। টাকা না দেয়ায় পরে থানার লোক কে ম্যানেজ করে আরো মামলায় নাম ডুকিয়ে দেয়ার হুমকি ও দিয়েছিল মোকাররম হোসেন দুলাল ওরফে দুলাল মিয়া।
অপর অভিযোগ কারী মো: হাসান (সম্ভাব্য প্রবাসী তাই ছদ্দ নাম ব্যবহার করা হয়েছে) জানান, জীবিকার তাগিদে প্রবাস জীবনে পাড়ি দেয়ার আগে ৩০শে সেপ্টেম্বর থানার গেটের সামনে অবস্থিত মা কম্পিউটারস অনলাইন সার্ভিস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার দুলাল মিয়াার দোকানে অনলাইনে কাগজপত্র ঠিক করার জন্য তার সাথে কথা বললে, তিনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য ১২ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।
উল্লেখ্য যে, গত বছরের অক্টোবরে তৎকালীন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো: আব্দুল বারীকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা ও তার দোকান বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন। সেই থেকে গত দুইদিন যাবত দুলাল আত্মগোপনে রয়েছেন এবং বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে ওসি বরাবর মোবাইল ফোনে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।
এর আগে সোনারগাঁ থানার মুন্সী কনস্টেবল কল্পনা আক্তারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে মোকাররম হোসেন দুলাল ওরফে দুলাল মিয়ার। সেই সুবাদে যেকোন অপকর্মের অভিযোগ আসলে অলৌকিক ভাবে বেঁচে যেতেন দুলাল। কিন্তু গত ৫ই আগস্টের পর কনস্টেবল কল্পনা আক্তারের বদলি ও ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ কারী ছাত্ররা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় দুলালের সকল অপরাধ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।
অভিযুক্ত মোকাররম হোসেন দুলাল ওরফে দুলাল মিয়া কে অভিনব ডাকাতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কে বা কারা ষড়যন্ত্র করে এসব করাচ্ছে। আর কনস্টেবল কল্পনার সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। কয়েকজন সাংবাদিক আমাকে নিয়ে রিপোর্ট করেছিল পরে তারা তা কেটে দিয়েছেন।
তৎকালীন সোনারগাঁ থানার ওসি মোঃ আব্দুল বারীর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে সোনারগাঁয়ে অসংখ্য সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জ্বালাতন করছেন এরা কোন ধরনের সাংবাদিক এদেরকে খতিয়ে দেখুন। আপনারা এদের তালিকা দিন ডিসি বরাবর । যেখানে আমাদের জেলা পুলিশ সুপার সম্পূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন যে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তা যেন সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা না নেওয়া হয় অথচ সে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
বর্তমানে সোনারগাঁ থানায় কোন ওসি না থাকাকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দুর্বলতা মনে করে মা কম্পিউটারস অনলাইন সার্ভিস এন্ড ট্রেনিং সেন্টারের মালিক দুলাল মিয়ার অপকর্ম ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান স্থানীয় অনেকে।