রাজবাড়ীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক কে পুলিশে দিলো গ্রামবাসী,থানায় মামলা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ী জেলা সদরের আলিপুরে মধ্য রাতে কাতার প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগে মোঃ সাদ্দাম (১৯) নামে এক যুবক কে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে গ্রামবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাত ১ টার দিকে।
আটককৃত মোঃ সাদ্দাম আলিপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়নপুর গ্রামের আবু বক্কার সেখের ছেলে।
ভূক্তভোগী গৃহবধু আলিপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর গ্রামের কাতার প্রবাসীর স্ত্রী।
ভূক্তভোগী গৃহবধূ (৩৫) অভিযোগ করে বলেন, সাদ্দাম আমার প্রতিবেশী। গত পনের দিন আগে থেকে সাদ্দাম আমার ইমো নাম্বারে বিভিন্ন ধরনের খারাপ ছবি পাঠাইয়া আমাকে কু প্রস্তাব দেয়। আমি প্রস্তাবে রাজি না হইলে সাদ্দাম আমার এডিটিং করা ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং তার ব্যবহৃত বিকাশ নাম্বার ০১৭৫২-৫৬১৪৫৯ তে ২ হাজার ৩০০ টাকা নেয়। পরবর্তীতে গত ইং ১২/০৭/২০২৫ তারিখ রাত ১ টার দিকে আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে সাদ্দাম আমার ঘরের খাটের নিচে লুকায়ে থাকে। আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে ঘরের দরজা বন্ধ করা মাত্রই সাদ্দাম তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়া আমার গলায় ধরে আমাকে খুন জখম করার ভয়ভীতি দেখাইয়া আমার পরিহিত স্যালোয়ার খুলিয়া আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ করাকালীন সময়ে সাদ্দামের সাথে ধস্তাধস্তিতে তার হাতে থাকা ধারালো চাকু আমার ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে লেগে কেটে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। তখন আমার আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সাদ্দাম দৌড়াইয়া পালানোর চেষ্টা করে এ সময় আশেপাশের লোকজন ওকে ধরে ফেলে। আমি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। আমি থানায় মামলা করেছি। আমার উপরে যে নির্যাতন হয়েছে আমি তার বিচার চাই।
ভূক্তভোগীর স্বামী মুঠোফোনে বলেন, আমি জিবিকার তাগিদে দীর্ঘ দিন দেশের বাহিরে আছি। আমার স্ত্রীর উপরে যে নির্যাতন হয়েছে আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ভূক্তভোগীর শশুর মোঃ আলি হোসেন বলেন, ঘটনার গভীর রাতে আমরা আলাদা রুমে ঘুমিয়ে ছিলাম। ছেলের বৌ বাচাও বাচাও চিৎকার করলে আমরা জেগে উঠি। এ সময় প্রতিবেশি সাদ্দাম দৌড়ে পালাতে গেলে এলাকায় রিকসা চোর পাহারায় থাকা প্রতিবেশি হৃদয় সাদ্দাম কে জাপটে ধরে ফেলে। পরে সব ঘটনা শুনতে পাই। আমরা আইনের কাছে দোষীর বিচার চাই।
ভূক্তভোগীর শাশুড়ী মমতাজ বেগম বলেন, আমার ছেলে দীর্ঘ দিন বিদেশে থাকে। ছেলের বৌ নাতি কে নিয়ে আমাদের বাড়িতে থাকে। কখনও তার চলাফেরায় কোন দোষ পাইনি। প্রতিবেশি সাদ্দাম যে অপকর্ম করেছে আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ দিকে অভিযুক্ত সাদ্দাম বলেন, কে যেন আমার ছবি দিয়ে ফেক ইমু আইডি খুলে চাচীর সাথে কথা বলতো। কিন্তু সে আমাকে সন্দেহ করে ঘটনার রাতে মোবাইল ফোনে তার বাড়িতে ডাকে। আমি রাতে তার বাড়িতে গেলে সে তার ঘরে নিয়ে আমাকে হুমকি দেয় এবং ব্লেড দিয়ে আমাকে জখম করে। পরে আমি পালাতে গেলে প্রতিবেশিরা আমাকে ধরে ফেলে। আমি ধর্ষণ করিনি।
অভিযুক্ত মোঃ সাদ্দামের মা কোহিনুর বেগম বলেন, আমার ছেলে সাদ্দাম কে ওরা কৌশলে ফাঁসিয়েছে। ওই মহিলা তো সম্পর্কে সাদ্দামের চাচি হয়। কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের কে জানাতো। আমরা পারিবারিকভাবে দেখতাম। আমার ছেলেটার জীবন নষ্ট করে দিলো।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এস আই
মোঃ এনায়েত শিকদার জানান, এ ঘটনায় ভূক্তভোগী নারী মামলা দায়ের করেছেন। ভূক্তভোগী নারীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।